ঢাকা,মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪

মাতামুহুরীর ভাঙ্গন রোধে জিও ব্যাগে বালু ভর্তিতে অনিয়মের অভিযোগ

মাতামুহুরী নদীর কোনাখালীর কাইদ্দার দিয়া এলাকায় মাটি ও বালুভর্তি জিও ব্যাগ ডাম্পিং

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া :: কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) চকরিয়া উপজেলার কোনাখালী ইউনিয়নের ৩টি স্পটে মাতামুহুরী নদীর ভাঙন রোধকল্পে জিও ব্যাগ ভর্তি বালু দিয়ে মাতামুহুরী নদীর ভাঙন ঠেকানোর কাজ শুরু করেছে। এলাকাবাসীর মতে, বেশ ক’বছর ধরে বর্ষা মৌসুম এলেই পাউবো এমন তৎপরতায় লিপ্ত হয়। যে কারণে পানি উন্নয়ন বোর্ড মাতামুহুরী নদীর কোনাখালী অংশে ভাঙন রোধে সফলতা পাচ্ছে না।

কক্সবাজার পাউবো বদরখালী শাখার কোনাখালী ইউনিয়নের ৩টি পয়েন্টে প্রতি বছরের মতো চলতি বর্ষা মৌসুমে কাজ শুরু করা হয়। উপকূলীয় কোনাখালী ইউনিয়নের কন্যারকুম, মরংঘোনা ও কাইদ্দার দিয়া নামক স্থানে মাতামুহুরী নদীর ভাঙনকবলিত এলাকায় নদীতে ডাম্পিং ও প্লেসিং করার জন্য জিও ব্যাগে বালু ভর্তির কাজ চলছে। অপরদিকে ভয়াবহ ভাঙনকবলিত কাইদ্দার দিয়া অংশে কিছু বালুর বস্তা ডাম্পিং ও প্লেসিং করা হয়েছে। বর্ষার পাহাড়ি ঢলের পানির তোড়ে সিংহভাগ বালুভর্তি বস্তা নদীতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে সচেতন মহল। যে কারণে ভাঙন ঠেকানো সম্ভব হচ্ছে না। এভাবে ভাঙন রোধের চেষ্টা অব্যাহত থাকায় কোনাখালী ইউনিয়নের বাঘগুজারা হয়ে বদরখালী পর্যন্ত স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর নির্মিত একটি সড়কের সিংহভাগ অংশ মাতামুহুরী নদীতে তলিয়ে গেছে।

চলতি বর্ষা মৌসুমে পাউবো ৩টি পয়েন্টে বালুভর্তি জিও ব্যাগ দিয়ে ভাঙন রোধকল্পে ১ কোটি ৪১ লাখ ৭৭ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। ওই ৩টি পয়েন্টের মধ্যে ১টি কোনাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও অপর দুটি পয়েন্ট ঠিকাদারের মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে। পাউবোর সংশ্নিষ্ট এসও জামাল মোর্শেদ জানিয়েছেন, মরংঘোনা পরিষদ ভবনের পূর্বাংশের ২টি প্যাকেজে ১০ হাজার ৫১টি ব্যাগের জন্য ৪৩ লাখ ৬৩ হাজার টাকা, কন্যারকুম ২টি প্যাকেজে ৭ হাজার ১১৮টি ব্যাগের জন্য ৩৯ লাখ ৯১ হাজার টাকা ও কাইদ্দার দিয়ায় ৩টি প্যাকেজে ১৪ হাজার ৫৭৮টি ব্যাগের জন্য ৫৮ লাখ ২৩ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ তিনটি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য মোট বরাদ্দ অর্থের পরিমাণ ১ কোটি ৪১ লাখ ৭৭ হাজার টাকা। এ বরাদ্দের বিপরীতে ৩১ হাজার ৭৩৯টি জিও ব্যাগে বালু ভর্তি করে নদীতে ডাম্পিং ও প্লেসিং করা হবে। জুন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে শুরু করা চলমান কাজ আগামী আগস্ট মাসের মধ্যে শেষ করা হবে বলে তিনি দাবি করেন।

স্থানীয়রা দাবি করেছেন, মাতামুহুরী নদীভাঙন-সংলগ্ন এলাকা থেকে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে নোনাবালু (কাদা মিশ্রিত) তুলে জিও ব্যাগে ভর্তি করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ অবৈধ। প্রতি বছর এভাবে বালুর বস্তা নদীভাঙন এলাকায় ডাম্পিং ও প্লেসিং করা হলেও তেমন কোনো সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। অথচ প্রতি বছরই পাউবোর বরাদ্দ কোটি কোটি টাকা পানিতে ভেসে যাচ্ছে। পাউবোর বদরখালী উপবিভাগীয় প্রকৌশলী ইফতেখার নয়ন দাবি করেন, এখানে কোনো অনিয়ম হচ্ছে না।

পাঠকের মতামত: